রক্তে লেখা প্রতিবাদ
পুরান ঢাকার রজনী ঘোষ লেনের সরু গলিপথ ধরে হেঁটে
যাচ্ছিলেন মো. সোহাগ (৪৩)। সন্ধ্যা নামলেই এই এলাকায় এক অন্যরকম প্রাণচাঞ্চল্য
শুরু হয়। দিনের বেলার শান্ত পরিবেশ ছাপিয়ে শুরু হয় হকারদের হাঁকডাক, রিকশার টুংটাং
শব্দ, আর পথচারীদের
কোলাহল। সোহাগের ভাঙারির ব্যবসা। পুরোনো লোহালক্কড়, প্লাস্টিক, কাগজ—এসব
সংগ্রহ করে বিক্রি করেন। এই ব্যবসাতেই তার সংসার চলে, চলে সন্তানদের পড়াশোনা।
পরিশ্রমি আর সৎ মানুষ হিসেবে এলাকায় তার বেশ পরিচিতি ছিল। প্রতিদিনের মতো সেদিনও
সন্ধ্যা ৬টার দিকে কাজ সেরে মিটফোর্ড হাসপাতালের তিন নম্বর গেটসংলগ্ন রজনী ঘোষ
লেনের পাশ দিয়ে নিজের ছোট টং দোকানের দিকে ফিরছিলেন। স্ত্রী ফাতেমা আর দুই ছেলেমেয়ের
মুখটা যেন তার চোখের সামনে ভাসছিল।
সোহাগের বয়স ৪৩ হলেও, জীবন সংগ্রামে তিনি যেন আরও
বেশি পরিপক্ক হয়ে উঠেছিলেন। পুরান ঢাকার বুকে তার ছোট্ট ভাঙারির দোকানটিই ছিল তার
স্বপ্ন আর সংগ্রামের কেন্দ্র। সকাল থেকে রাত অবধি হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতেন।
রিকশাভ্যানে করে পাড়া-মহল্লা থেকে পুরোনো জিনিসপত্র কুড়িয়ে আনতেন, তারপর সেগুলো
বাছাই করে বিক্রি করতেন। এই শহরের ইট-কাঠ-পাথর আর মানুষের কোলাহলের মাঝেও তিনি
খুঁজে পেয়েছিলেন এক টুকরো শান্তি। স্ত্রী ফাতেমা, ছোট ছেলে করিম আর মেয়ে
রিনাকে নিয়ে তার ছোট্ট সংসার। করিম সবে পঞ্চম শ্রেণিতে আর রিনা তৃতীয় শ্রেণিতে
পড়ে। তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াটা সোহাগের কাছে ছিল সবচেয়ে বড় স্বপ্ন। তিনি
চাইতেন, তার সন্তানরা
যেন তার মতো ভাঙারির ব্যবসা করে জীবন না কাটায়, তারা যেন পড়ালেখা শিখে বড়
কিছু হয়।
গত কয়েক মাস ধরে অবশ্য সোহাগের জীবনে একটা নতুন
কালো মেঘ ঘনিয়ে আসছিল। এলাকার এক নেতা মইন। মইন শুধু নামেই নেতা ছিল না,
কার্যত সে ছিল
এলাকার একচ্ছত্র চাঁদাবাজ। তার একটা বিশাল গ্যাং ছিল, যারা এলাকার প্রতিটি
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করত। ছোট চা দোকান থেকে শুরু করে বড়
গুদাম, কেউই মইনের
খপ্পর থেকে রেহাই পেত না। প্রথমদিকে সোহাগকে সে পাত্তা দেয়নি, কারণ তার
ব্যবসা খুবই ছোট, কিন্তু যখন সোহাগের ব্যবসা একটু গতি পেলো, তখন মইনের চোখ
পড়ল তার দিকে।
প্রথমদিকে মইনের লোকেরা এসে সোহাগের কাছে মাসিক
১০০০ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। সোহাগ সবিনয়ে তাদের বুঝিয়েছিলেন যে তার ব্যবসা এতটাই
ছোট যে এই সামান্য টাকাও তার জন্য অনেক। "ভাই, আমার কি আছে যে আপনাদের
দেবো? যা কামাই করি,
তা দিয়ে দুবেলা
ভাত জোটে না," সোহাগ কাতরভাবে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু মইনের লোকেরা সে
কথা শুনল না। তারা পর পর তিনবার এসে হুমকি দিয়ে গেল। প্রতিবারই সোহাগ একই কথা
বললেন, একই অনুরোধ
করলেন। তিনি মইনকে সরাসরি টাকা দিতে অস্বীকার করে বলেছিলেন, "আমি কষ্ট করে
খাই। এক পয়সাও দিতে পারবো না।"
মইনের কানে যখন এই খবর পৌঁছাল, তখন তার অহমে
ঘা লাগল। সে এর আগে এমন কোনো ব্যবসায়ীকে দেখেনি যে তাকে সরাসরি চাঁদা দিতে
অস্বীকার করে। মইনের কাছে এটা ছিল তার ক্ষমতার প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ। সে সোহাগকে
শিক্ষা দেওয়ার পণ করল। এর আগেও সে অনেককে এমন 'শিক্ষা' দিয়েছে। কেউ
বেধড়ক মার খেয়েছে, কেউ বা ব্যবসা গুটিয়ে এলাকা ছেড়েছে। মইন ভাবল, সোহাগকেও সে
একইভাবে শায়েস্তা করবে।
৯ই জুলাই তারিখে, দিনটা ছিল অন্যদিনের মতোই
সাধারণ। সোহাগ সারাদিন ধরে কাজ করেছিলেন, মিটফোর্ডের কাছাকাছি কয়েকটি গুদাম থেকে কিছু
পুরোনো কাগজ আর প্লাস্টিক সংগ্রহ করে এনেছিলেন। বিকালের দিকে তার মনটা বেশ ফুরফুরে
ছিল। তিনি ভাবছিলেন, আজ বেশ ভালোই লাভ হয়েছে। এই টাকা দিয়ে হয়তো ফাতেমার জন্য
একটা শাড়ি আর ছেলেমেয়ের জন্য কিছু খেলনা কিনতে পারবেন। সন্ধ্যা ৬টা। সূর্যের আলো
মিলিয়ে আসছিল, মিটফোর্ডের সামনের রাস্তায় গাড়ির জ্যাম লেগেছিল। সোহাগ রজনী
ঘোষ লেনের মুখে এসে নিজের ছোট টং দোকানটির তালা খুলতে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই মইন
আর তার এক সহযোগী, যার নাম রওশন, তার সামনে এসে দাঁড়াল।
"কি রে সোহাগ, খুব তো বড়
মানুষ হয়ে গেছিস! আমার দেওয়া টাকা দিবি না বলছিস? সাহস কত তোর?" মইনের কণ্ঠে
তীব্র বিষ আর অহংকার।
সোহাগ মইনের দিকে তাকালেন। তার চোখে ভয় ছিল না,
ছিল এক ধরনের
দৃঢ়তা। "ভাই, আমি তো বলেছি, আমার কাছে দেওয়ার মতো কিছু নেই। আমি কারও রক্ত
চুষে খাই না, চাইলেন আর দিয়ে দিবো।আমার সব পরিশ্রমের
টাকা, ভাই।"
মইনের মুখ লাল হয়ে উঠল। সে এমন জবাবের জন্য
প্রস্তুত ছিল না। তার গ্যাংয়ের সামনে তার এই অপমান মেনে নেওয়া অসম্ভব। "তাহলে
কি করবি? এই এলাকার মালিক আমি,
আর তুই আমাকে
টাকা দিবি না বলছিস?"
"আপনি মালিক হতে পারেন,
কিন্তু আমি
আপনার দাস নই। আমি নিজের শ্রম দিয়ে খাই, কারও দয়ায় নয়।" সোহাগের এই কথাগুলো যেন
মইনের কানে বিষ ঢেলে দিল। তার অহংকারী মস্তিষ্কে আগুন ধরে গেল।
"এত বড় কথা!" মইন
হিসহিস করে উঠল। সে আশেপাশের দিকে তাকাল। রজনী ঘোষ লেনের প্রবেশপথ সবসময়েই বেশ
জনাকীর্ণ থাকে, কিন্তু মইনের ভয়ে কেউ তার সামনে মুখ খুলতে সাহস পায় না। মইন
দ্রুত তার হাতের ইশারায় রওশনকে কাছে ডাকল। রওশন মুহূর্তেই মইনের উদ্দেশ্য বুঝে
ফেলল। সে রাস্তার পাশ থেকে একটা মাঝারি আকারের পাথর কুড়িয়ে নিল।
সোহাগ তখনও বুঝতে পারেননি যে তার সামনে কী ভয়াবহ
বিপদ অপেক্ষা করছে। তিনি তখনও ভাবছিলেন হয়তো মইন তাকে হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেবে,
যেমনটা আগে
করেছিল। কিন্তু মইন এবার আর হুমকি দিয়ে থামল না। তার চোখে ছিল পৈশাচিক জিঘাংসা।
"আজ থেকে তোর ভাঙারির ব্যবসা
বন্ধ। এই এলাকা থেকে তুই চলে যাবি, আর কোনোদিন তোর মুখ দেখতে চাই না!" মইন গর্জন করে উঠল।
সোহাগ দৃঢ় গলায় বললেন, "আমি যাব না।
আমি এখানেই ব্যবসা করি, এখানেই থাকব। আমার মতো গরিবের কাছ থেকে জোর করে টাকা নেওয়া
আপনাদের মতো মানুষের কাজ।"
এই কথাগুলো ছিল মইনের জন্য শেষ সীমালঙ্ঘন। মইন
একটা ইঙ্গিত করল রওশনকে। রওশন কোনো কথা না বলে, হাতে থাকা পাথরটা দিয়ে
সজোরে সোহাগের মাথায় আঘাত করল।
নৃশংস! নির্মম! সোহাগের মাথা ফেটে রক্ত গড়িয়ে
পড়ল। তিনি আর্তনাদ করারও সুযোগ পেলেন না। মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। তার
শরীরের সমস্ত শক্তি যেন নিমিষেই শেষ হয়ে গেল। জ্ঞান হারালেন তিনি। আশেপাশের
মানুষজন ভয়ে জমে গেল। কেউ উচ্চস্বরে কথা বলার সাহস পেল না। এই নৃশংসতা দেখে সবাই
স্তব্ধ। মইন আর রওশন ততক্ষণে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে গেল।
কয়েক মুহূর্তের নীরবতা ভাঙল আশেপাশের মানুষের
চিৎকার। "আরে কে রে ওটা? সোহাগ ভাই না? এই রিকশা, রিকশা! হাসপাতালে নিতে
হবে!" কয়েকজন যুবক দ্রুত এগিয়ে এলো। সোহাগের মাথার নিচ থেকে রক্ত বেরিয়ে রজনী
ঘোষ লেনের কালচে মাটি ভিজিয়ে দিচ্ছিল। তার নিথর দেহটা তুলে রিকশায় নেওয়া হলো।
রিকশা চলল মিটফোর্ড হাসপাতালের দিকে, মাত্র তিন নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকা হলেও রিকশায়
নিতে নিতেই মনে হচ্ছিল প্রতিটি মুহূর্ত যেন এক একটা যুগের সমান।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যখন সোহাগকে আনা হলো,
ততক্ষণে তার
অবস্থা খুবই গুরুতর। ডাক্তাররা দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলেন, কিন্তু মাথার আঘাত এতটাই
গভীর ছিল যে তাদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলো। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই ডাক্তাররা
রায় দিলেন – Md. Sohag is no more. (মো. সোহাগ আর নেই।)
এই খবরটা যেন বজ্রপাতের মতো ভেঙে পড়ল সোহাগের
পরিবারে। ফাতেমা, তার স্ত্রী, যখন খবর পেলেন, তখন তার পৃথিবীটা যেন থমকে গেল। তিনি বিশ্বাস
করতে পারছিলেন না যে, যে মানুষটা একটু আগে সুস্থ শরীরে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার
প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, সে এভাবে হঠাৎ করে পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে। তার দুই ছোট
শিশু, করিম আর রিনা,
তখনও খেলার ছলে
বাবা বাড়ি ফিরবেন বলে অপেক্ষা করছিল। মা-বাবার আহাজারি দেখে তারা হতভম্ব হয়ে চেয়ে
রইল। কান্না আর চিৎকারে মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছিল। ফাতেমা নিজের
চুল ছিঁড়ছিলেন, বুক চাপড়াচ্ছিলেন, "ওগো, তুমি কী করলে! আমার
ছেলেমেয়েদের কী হবে গো!"
খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল। কোতোয়ালি থানার ওসি এবং
অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালেন। রজনী ঘোষ লেনে তখনো মানুষের জটলা।
সবাই ভয়ে ভয়ে কথা বলছিল। কেউই মইনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে রাজি হচ্ছিল না। মইনের
ত্রাস এতটাই ছিল যে, মানুষ খুন হতে দেখলেও ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছিল। তবে পুলিশের
তদন্ত শুরু হলো। একজন সাহসী প্রত্যক্ষদর্শী, যিনি ঘটনার সময় তার চা
দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন, গোপনে পুলিশকে মইন এবং রওশনের নাম জানান। পুলিশের কাছে
মইনের চাঁদাবাজির রেকর্ড আগেই ছিল, কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে তাকে ধরা কঠিন ছিল। এবার
প্রত্যক্ষদর্শী এবং অন্যান্য সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ দ্রুত অভিযান
শুরু করল।
কোতোয়ালি থানার এসআই রহমান, যিনি এই মামলার
দায়িত্ব পেয়েছিলেন, তিনি জানতেন এই মামলাটি কত সংবেদনশীল। পুরান ঢাকায়
চাঁদাবাজির ঘটনা নতুন নয়, কিন্তু এভাবে সরাসরি খুন করাটা এক নতুন স্তরের বর্বরতা।
এসআই রহমান দ্রুত তার টিম নিয়ে অভিযানে নামলেন। মইন এবং রওশনকে খুঁজে বের করা
কঠিন ছিল না। তারা ভেবেছিল, ঘটনার পর তারা এলাকা ছেড়ে লুকিয়ে পড়লে কেউ তাদের খুঁজে
পাবে না। কিন্তু পুলিশের কাছে তাদের সব ঠিকানা এবং আশ্রয়স্থল সম্পর্কে তথ্য ছিল।
মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ মইন এবং রওশন উভয়কেই আটক করতে সক্ষম হলো।
আটকের খবর পেয়ে এলাকার মানুষজন স্বস্তির
নিঃশ্বাস ফেলল। দীর্ঘদিনের ত্রাস মইন অবশেষে ধরা পড়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং
সাধারণ মানুষ যারা মইনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল, তারা পুলিশের এই দ্রুত
পদক্ষেপে সাধুবাদ জানাল। মইনকে জেরা করার সময় সে প্রথমে অস্বীকার করলেও, পরে সকল
প্রমাণের মুখে এবং রওশনের জবানবন্দিতে সে তার অপরাধ স্বীকার করল। তারা উভয়েই
চাঁদাবাজি এবং নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করল।
সোহাগের মরদেহ ময়নাতদন্তের পর তার পরিবারের কাছে
হস্তান্তর করা হলো। পুরান ঢাকার ছোট গলি পথে সোহাগের জানাজা অনুষ্ঠিত হলো। শত শত
মানুষ জড়ো হয়েছিল তার জানাজায়, যারা সোহাগকে ভালোবাসত, যারা তার সততার প্রশংসা
করত। তাদের চোখে ছিল শোক, আর মনে ছিল মইনের প্রতি তীব্র ঘৃণা। জানাজা শেষে সোহাগকে
আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হলো।
বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলো। রাষ্ট্রপক্ষ মইন ও
রওশনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করল। সংবাদপত্র এবং টেলিভিশনে এই খবর ফলাও করে
প্রচার হলো। মানুষজন চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সোচ্চার হলো, নিরীহ ব্যবসায়ীদের
নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি তোলা হলো। সোহাগের মৃত্যু শুধু একটি হত্যাকাণ্ড ছিল
না, এটি ছিল
চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে একটি নীরব প্রতিবাদের প্রতীক।
ফাতেমা তার স্বামীকে হারিয়ে দিশেহারা, কিন্তু তিনি
ভেঙে পড়লেন না। তার চোখে স্বামীর রেখে যাওয়া স্বপ্নের ছায়া, সন্তানদের
ভবিষ্যৎ। তিনি শপথ নিলেন, তার সন্তানদের সোহাগের মতো সৎ আর সাহসী করে তুলবেন। এলাকার
মানুষজন, যারা সোহাগকে চিনত, তারা ফাতেমার পাশে দাঁড়াল। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা
চাঁদার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হলো।
সোহাগ হয়তো চলে গেছেন, কিন্তু তার রেখে যাওয়া সততা,
তার সাহসিকতা
আর তার আত্মত্যাগ পুরান ঢাকার মানুষের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবে। মইনের মতো
চাঁদাবাজদের হয়তো সাময়িকভাবে দমন করা যায়, কিন্তু সোহাগের মতো মানুষের আত্মত্যাগই সমাজের
গভীর থেকে এই চাঁদা নামের অভিশাপকে উৎখাত করার প্রেরণা যোগায়। রজনী ঘোষ লেনের
প্রতিটা পাথর যেন আজও সোহাগের সেই দৃঢ় কণ্ঠস্বর স্মরণ করিয়ে দেয়, "আমি যাব না,
আমি নিজের শ্রম
দিয়ে খাই, কারও দয়ায় নয়।"